শ্রী কৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম লিরিক্স: হল শ্রীকৃষ্ণের ১০৮ টি নামের ব্যাখ্যা। যা কিনা বিভিন্ন্য দেব দেবী শ্রীকৃষ্ণের এই নামগুলি রেখেছিলেন। এই নামগুলি হিন্দু ধর্মগ্রন্থে, বিশেষ করে ভাগবত পুরাণ এবং বিষ্ণু পুরাণে পাওয়া যায়। বিশ্বাস করা হয় যে শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম জপ করলে পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং মোক্ষ লাভ করা সম্ভব হয়। কৃষ্ণ ভক্তদের বিশ্বাস, এই নামগুলি জপ করলে তাদের মনবঞ্চিত ইচ্ছা পূরণ হয় এবং নিয়মিত শ্রবণ কীর্তন করলে শ্রীকৃষ্ণের কৃপা লাভ করা যায় এবং জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে।

শ্রী কৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম লিরিক্স
জয় জয় গোবিন্দ গোপাল গদাধর ।
কৃষ্ণচন্দ্র কর কৃপা করুণাসাগর ॥
জয় জয় গোবিন্দ গোপাল বনমালী ।
শ্রীরাধার প্রাণধন মুকুন্দ মুরারি ॥
হরিনাম বিনে রে গোবিন্দনাম বিনে ।
বিফলে মনুষ্য-জন্ম যায় দিনে দিনে ॥
দিন গেল মিছা কাজে রাত্রি গেল নিদ্রে ।
না ভজিনু রাধাকৃষ্ণ-চরণারবিন্দে ॥
কৃষ্ণ ভজিবার তরে সংসারে আইনু ।
মিছা-মায়ায় বন্ধ হ’য়ে বৃক্ষসম হৈনু ৷৷
ফলরূপে পুত্র-কন্যা ডাল ভাঙ্গি’ পড়ে ।
কালরূপে সংসারেতে পক্ষী বাসা করে ॥
যখন কৃষ্ণ জন্ম নিল দৈবকী উদরে ।
মথুরাতে দেবগণ পুষ্পবৃষ্টি করে ৷৷
বসুদেব রাখি’ আইল নন্দের মন্দিরে ।
নন্দের আলয়ে কৃষ্ণ দিনে দিনে বাড়ে ৷৷
শ্রীনন্দ রাখিল নাম “নন্দের নন্দন‘ ১।
যশোদা রাখিল নাম “যাদু বাছাধন” ২ ৷৷
উপানন্দ নাম রাখে “সুন্দর গোপাল” ৩।
ব্রজবালক নাম রাখে “ঠাকুর রাখাল” ৪ ৷৷
সুবল রাখিল নাম ঠাকুর কানাই” ৫ ।
শ্রীদাম রাখিল নাম ‘রাখালরাজা-ভাই” ৬॥
“ননীচোরা” নাম রাখে যতেক গোপিনী ৭।
“কালোসোনা” নাম রাখে রাধাবিনোদিনী ৮ ৷৷
শ্রী কৃষ্ণের ১০৮ টা নাম বাংলা পরবর্তী অংশ
কুব্জা রাখিল নাম “পতিতপাবন হরি” ৯ ৷৷
“চন্দ্রাবলী” নাম রাখে মোহন বংশীধারী’ ১০।
‘অনন্ত’ রাখিল নাম অন্ত না পাইয়া ১১।
‘কৃষ্ণ’ নাম রাখে গর্গ ধ্যানেতে জানিয়া ১২ ৷৷
কন্বমুনি রাখে নাম ‘দেব চক্রপাণি’ ১৩।
‘বনমালী’ নাম রাখে বনের হরিণী ১৪ ৷৷
গজরাজ নাম রাখে ‘শ্রীমধুসূদন’ ১৫।
অজামিল নাম রাখে ‘দেব নারায়ণ” ১৬ ৷৷
পুরন্দর নাম রাখে দেব শ্রীগোবিন্দ’ ১৭।
দ্রৌপদী রাখিল নাম ‘ দেব দীনবন্ধু’ ১৮ ৷৷
সুদামা রাখিল নাম ‘দারিদ্র্যভঞ্জন’ ১৯।
ব্রজবাসী নাম রাখে ব্রজের জীবন’ ২০ ৷৷
‘দর্পহারী’ নাম রাখে অর্জুন সুধীর ২১।
‘পশুপতি ‘ নাম রাখে গরুড় মহাবীর ২২ ৷৷
যুধিষ্ঠির নাম রাখে দেব যদুবর’ ২৩।
বিদুর রাখিল নাম ‘কাঙ্গালের ঠাকুর ‘ ২৪ ৷৷
বাসুকী রাখিল নাম “দেব সৃষ্টি-স্থিতি’ ২৫।
ধ্রুবলোকে নাম রাখে ‘ধ্রুবের সারথী’ ২৬ ৷৷
নারদ রাখিল নাম ‘ভক্তপ্ৰাণধন’ ২৭ ।
ভীষ্মদেব নাম রাখে ‘লক্ষ্মীনারায়ণ’ ২৮৷৷
সত্যভামা নাম রাখে ‘সত্যের সারথী’ ২৯।
জাম্ববতী নাম রাখে দেব যোদ্ধাপতি’ ৩০ ৷৷
বিশ্বামিত্র নাম রাখে ‘সংসারের সার’ ৩১।
অহল্যা রাখিল নাম ‘পাষণ-উদ্ধার’ ৩২ ৷৷
শ্রী কৃষ্ণের অষ্টতর শতনাম বাংলায় পরবর্তী অংশ
ভৃগুমুনি নাম রাখে ‘জগতের হরি’৩৩।
পঞ্চমুখে ‘রাম’-নাম গান ত্রিপুরারি ৩৪ ৷৷
কুঞ্জকেশী নাম রাখে ‘বলী সদাচারী’ ৩৫।
প্রহ্লাদ রাখিল নাম ‘নৃসিংহ মুরারী’ ৩৬ ৷৷
বশিষ্ঠ রাখিল নাম মুনি-মনোহর। ৩৭
বিশ্বাবসু নাম রাখে নবজলধর।। ৩৮
সম্বর্ত্তক নাম রাখে গোবর্দ্ধনধারী। ৩৯
প্রাণপতি নাম রাখে যত ব্রজনারী।। ৪০
অিদিত রািখল নাম অরাতি সূদন।৪১
গদাধর নাম রাখে যমল-অর্জ্জুন।।৪২
মহাযোদ্ধা নাম রাখে ভীম মহাবল।৪৩
দয়ানিধি নাম রাখে দরিদ্র সকল ।। ৪৪
বৃন্দাবনচন্দ্র নাম রাখে বৃন্দাদূতী । ৪৫
বিরজা রাখিল নাম যমুনার পতি ।।৪৬
বাণীপতি নাম রাখে গুরু বৃহস্পতি । ৪৭
লক্ষ্মীপতি নাম রাখে সুমন্ত্র সারথি।। ৪৮
সান্দীপনি নাম রাখে দেব অন্তৰ্য্যামী! ৪৯
পরাশর নাম রাখে ত্রিলোকের স্বামী ।। ৫০
পদ্মযোনি নাম রাখে অনাদির আদি। ৫১
নট-নারায়ণ নাম রাখিল সম্বাদি।। ৫২
হরেকৃষ্ণ নাম রাখে প্রিয় বলরাম। ৫৩
ললিতা রাখিল নাম দুৰ্ব্বাদল-শ্যাম।। ৫৪
বিশাখা রাখিল নাম অনঙ্গমোহন। ৫৫
সুচিত্রা রাখিল নাম শ্রীবংশীবদন।। ৫৬
আয়ান রাখিল নাম ক্রোধ-নিবারণ। ৫৭
চণ্ডকেশী নাম রাখে কৃতান্ত-শাসন।।৫৮
জ্যোতিষ্ক রাখিল নাম নীলকান্তমণি। ৫৯
গোপীকান্ত নাম রাখে সুদাম ঘরণী।। ৬০
ভক্তগণ নাম রাখে দেব জগন্নাথ। ৬১
দুর্ব্বাসা রাখেন নাম অনাথের নাথ।। ৬২
রাসেশ্বর নাম রাখে যতেক মালিনী। ৬৩
সর্ব্বযজ্ঞেশ্বর নাম রাখেন শিবানী।। ৬৪
উদ্ধব রাখিল নাম মিত্র হিতকারী। ৬৫
অক্রূর রাখিল নাম ভব-ভয়হারী।। ৬৬
গুঞ্জমালী নাম রাখে নীল-পীতবাস। ৬৭
সৰ্ব্ববেত্তা নাম রাখে দ্বৈপায়ন ব্যাস।। ৬৮
বাংলায় শ্রী কৃষ্ণের ১০৮টি নাম পরবর্তী অংশ
অষ্টসখী নাম রাখে ব্রজের ঈশ্বর। ৬৯
সুরলোকে নাম রাখে অখিলের সার।। ৭০
বৃষভানু নাম রাখে পরম ঈশ্বর। ৭১
স্বর্গবাসী নাম রাখে দেব পরাৎপর।। ৭২
পুলোমা রাখেন নাম অনাথের সখা। ৭৩
রসসিন্ধু নাম রাখে সখী চিত্রলেখা।। ৭৪
চিত্ররথ নাম রাখে অরাতি দমন। ৭৫
পুলস্ত্য রাখিল নাম নয়ন-রঞ্জন।। ৭৬
কশ্যপ রাখেন নাম রাস-রাসেশ্বর। ৭৭
ভাণ্ডারীক নাম রাখে পূর্ণশশধর।। ৭৮
সুমালী রাখিল নাম পুরুষ প্রধান। ৭৯
পুরঞ্জন নাম রাখে ভক্তগণ-প্রাণ।। ৮০
রজকিনী নাম রাখে নন্দের দুলাল। ৮১
আহ্লাদিনী নাম রাখে ব্রজের গোপাল।। ৮২
দেবকী রাখিল নাম নয়নের মণি। ৮৩
জ্যোতিৰ্ম্ময় নাম রাখে যাজ্ঞবল্ক্যমুনি ।। ৮৪
অত্রি মুনি নাম রাখে কোটি চন্দ্রেশ্বর। ৮৫
গৌতম রাখিল নাম দেব-বিশ্বম্ভর।। ৮৬
মরীচি রাখিল নাম অচিন্ত্য অচ্যুত। ৮৭
জ্ঞানাতীত নাম রাখে শৌনকাদি সূত।। ৮৮
রুদ্রগণ নাম রাখে দেব মহাকাল। ৮৯
বসুগণ নাম রাখে ঠাকুরদয়াল।। ৯০
সিদ্ধগণ নাম রাখে পুতনা নাশন। ৯১
সিদ্ধার্থ রাখিল নাম কপিল তপোধন।। ৯২
ভাগুরি রাখিল নাম অগতির গতি। ৯৩
মৎস্যগন্ধা নাম রাখে ত্রিলোকের পতি।। ৯৪
শুক্রাচার্য্য রাখে নাম অখিল-বান্ধব। ৯৫
বিষ্ণুলোকে নাম রাখে দেব শ্রীমাধব।। ৯৬
যদুগণ নাম রাখে যদুকুলপতি। ৯৭
অশ্বিনীকুমার নাম রাখে সৃষ্টি-স্থিতি।। ৯৮
অর্য্যমা রাখিল নাম কাল-নিবারণ। ৯৯
সত্যবতী নাম রাখে অজ্ঞান নাশন।। ১০০
পদ্মাক্ষ রাখিল নাম ভ্রমর ভ্রমরী। ১০১
ত্রিভঙ্গ রাখিল নাম যত সহচরী।। ১০২
বঙ্কচন্দ্র নাম রাখে শ্রীরূপমঞ্জরী। ১০৩
মাধুরী রাখিল নাম গোপী-মনোহারী।। ১০৪
মঞ্জুমালী নাম রাখে অভীষ্টপূরণ। ১০৫-
কুটিলা রাখিল নাম মদনমোহন।। ১০৬
মঞ্জরী রাখিল নাম কৰ্ম্মবন্ধনাশ। ১০৭
ব্রজবধূ নাম রাখে পূর্ণ অভিলাষ।। ১০৮
শ্রীকৃষ্ণের অষ্টতর শতনাম পরবর্তী অংশ
দৈত্যারি দ্বারকানাথ দারিদ্র্যভঞ্জন ।
দয়াময় দ্রৌপদীর লজ্জা-নিবারণ ৷৷
স্বরূপে সবার হয় গোলোকেতে স্থিতি।
বৈকুণ্ঠে বৈকুণ্ঠনাথ কমলার পতি ৷৷
রসময় রসিক নাগর অনুপম।
নিকুঞ্জবিহারী হরি নবঘনশ্যাম ॥
শালগ্রাম দামোদর শ্রীপতি শ্রীধর ।
তারক-ব্রহ্ম সনাতন পরম ঈশ্বর ॥
কল্পতরু কমললোচন হৃষিকেশ ।
পতিতপাবন গুরু জ্ঞান-উপদেশ ॥
চিন্তামণি চতুর্ভূজ দেব চক্রপাণি ।
দীনবন্ধু দেবকীনন্দন যদুমণি ॥
অনন্ত কৃষ্ণের নাম অনন্ত মহিমা ।
নারদাদি ব্যাসদেব দিতে নারে সীমা ।।
নাম ভজ নাম চিন্ত নাম কর সার ।
অনন্ত কৃষ্ণের নাম মহিমা অপার ।।
শতভার-সুবর্ণ-গো-কোটি-কন্যাদান ।
তথাপি না হয় কৃষ্ণনামের সমান ।।
যেই নাম সেই কৃষ্ণ ভজ নিষ্ঠা করি ।
নামের সহিত আছেন আপনি শ্রীহরি ।।
শুন শুন ওরে ভাই নাম-সংকীর্তন ।
যে নাম শ্রবণে হয় পাপ-বিমোচন।।
কৃষ্ণনাম ভজ জীব আর সব মিছে ।
পলাইতে পথ নাই যম আছে পিছে ।।
কৃষ্ণনাম হরিনাম বড়ই মধুর ।
যেই জন কৃষ্ণ ভজে সে বড় চতুর।।
ব্রহ্মা আদি দেব যাঁরে ধ্যানে নাহি পায় ।
সে-হরি-বঞ্চিত হ’লে কি হবে উপায় ।।
হিরণ্যকশিপুর করি উদর বিদারণ ।
প্রহ্লাদে করিলা রক্ষা দেব নারায়ণ ।।
বলিরে ছলিতে প্রভু হইলা বামন ।
দ্রৌপদীর লজ্জা হরি কৈলা নিবারণ ।।
অষ্টোত্তরশত নাম যে করে পঠন ৷
অনায়াসে পায় রাধাকৃষ্ণের চরণ ।।
ভক্তবাঞ্ছা পূর্ণ করে নন্দের নন্দন ।
মথুরায় কংসধ্বংস, লঙ্কায় রাবণ ।।
বকাসুরবধ আদি কালীয়দমন।
নরত্তম দাশ কহে নাম-সংকীর্তন ।।
শ্রীকৃষ্ণের নাম জপের নিয়ম এবং উপকারিতা
নাম জপের নিয়ম:
- পবিত্র এবং শান্ত পরিবেশে নাম জপ করুন।
- একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে প্রতিদিন জপ করুন।
- মন্ত্রমালা বা জপমালা ব্যবহার করুন।
উপকারিতা:
- মনশান্তি: নাম জপ করলে মন শান্ত হয় এবং আত্মিক স্থিতি লাভ হয়।
- নেতিবাচক শক্তি দূর হয়: শ্রীকৃষ্ণের নাম উচ্চারণে জীবনের সব ধরনের নেতিবাচক শক্তি দূর হয়।
- ভক্তি বৃদ্ধি: শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
- সফলতা: জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুখ এবং সমৃদ্ধি আসে।
উপসংহার
শ্রীকৃষ্ণের ১০৮ নামের জপ এবং শ্রবণ শুধু আধ্যাত্মিক পথ নয়, বরং এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক প্রশান্তির উৎস। ভক্তদের বিশ্বাস, এই নামগুলি জপ করলে জীবনের সমস্ত দুঃখ দূর হয় এবং আনন্দ ও সমৃদ্ধি আসে।
তাই, আসুন আমরা প্রতিদিন শ্রীকৃষ্ণের নাম জপ করি এবং তাঁর কৃপা লাভের মাধ্যমে আমাদের জীবনকে পরিপূর্ণ করি।