শ্রীকৃষ্ণ চালিশা – ভক্তির ৪০ চরণে প্রেম, শান্তি ও অলৌকিক আশীর্বাদ | জীবনের দুঃখ, কষ্ট ও অশান্তি দূর করার সহজতম উপায়

Share Please:

শ্রীকৃষ্ণ, যিনি ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার, ভক্তদের জীবনে প্রেম, করুণা, ও শান্তির আলো ছড়ান। তাঁর নাম স্মরণ করলে মন থেকে অশান্তি দূর হয় এবং জীবনে আসে আনন্দ ও ইতিবাচকতা। শ্রীকৃষ্ণ চালিশা হলো এমন একটি ভক্তিগীতি যা শ্রীকৃষ্ণের গুণ, লীলা ও মাহাত্ম্যকে ৪০টি চরণে তুলে ধরে।

শ্রীকৃষ্ণ চালিশা

কৃষ্ণ চালিশা কী?

কৃষ্ণ চালিশা মূলত একটি স্তোত্র যা কবিতার আকারে রচিত, যেখানে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম, বাল্যলীলা, গোপী ও রাধার সঙ্গে সম্পর্ক, এবং কুরুক্ষেত্রের মহাভারতের সময় তাঁর দিভ্য উপদেশ—সব কিছু সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে। সাধারণ ভক্ত থেকে শুরু করে আধ্যাত্মিক অন্বেষী—সবাই এটি পাঠ করতে পারেন।


শ্রীকৃষ্ণ চালিশা – ভক্তির সরল পথ

॥ শ্রীকৃষ্ণ চালিশা দোহা ॥

বংশী শোভিত কর মধুর, নীল জলদ তনু শ্যামল।
অরুণ অধর জনু বিম্বা ফল, নয়ন কমল অভিরাম॥
পূর নিন্দু, অরবিন্দ মুখ, পীতাম্বর শুভ সাজল।
জয় মনমোহন মদন ছবি, কৃষ্ণচন্দ্র মহারাজ॥

॥ শ্রীকৃষ্ণ চালিশা॥

জয় যদুনন্দন জয় জগবন্দন। জয় বসুদেব দেবকি নন্দন॥
জয় যশোদা সুত নন্দ দুলারে। জয় প্রভু ভক্তন কে রাখবারে॥
জয় নটনাগর, নাগ নথইয়া। কৃষ্ণ কনইয়া ধেনু চরেইয়া॥
পুনি নখ পর প্রভু গিরিবার ধারো। আও দীনন কষ্ট নিবারো॥

বংশী মধুর অধর ধরি তেরী। হোভে পূর্ণ বিনয় রথ মেরী॥
আও হরি পুনি মাখন চাখো। আজ লাজ ভক্তন কি রাখো॥
গোল কপোল, চিবুক অরুণারে। মৃদু মুসকান মোহিনী ডারে॥
রঞ্জিত রাজিব নয়ন বিশালা। মোর মুকুট বৈজন্তী মালা॥

কুন্ডল শ্রবণ, পীত পট আছে। কটি কিংকিণী কাছন কাছে॥
নীল জলজ সুন্দর তনু সোহে। ছবি লখী, সুর নার মুনি মন মোহে॥
মস্তক তিলক, অলক ঘুঙরালে। আও শ্যাম বাঁশুরি ওয়ালে॥
করি পী পান, পুতনাহী তারয়ো। অকা বকা কাগা সুর মারয়ো।

মধুবন জলত অগ্নি যব জ্বালা। ভয়ে শীতল লখিতাহী নন্দলালা॥
সুরপাতি যব ব্রজ চড়ায়ো রিসাই। মূসর ধার বারি বর্ষাই॥
লগত লাগত ব্রজ – চাহং বহায়ো। গোবর্ধন নখ ধারী বচায়ো॥
লখি যশোদা মন ভ্রম অধিকাই। মুখ মঁহ চৌদহ ভূবন দেখাই॥

দুষ্ট কংস অতি উধম মচায়ো। কোটি কমল কহাঁ ফুল মঙ্গায়ো॥
নাথি কালিয়হিঁ তব তুম লিনহো। চরণ চিহ্ন দৌ নির্ভয় কীনহেঁ॥
করি গোপিন সঙ্গ রাস বিলাসা। সব কী পূরণ করী অভিলাষা॥
কেতিক মহা অসুর সংহারয়ো। কংসহি কেশ পকড় দী মারয়ো॥

মাতু পিতা কি বন্দি ছুড়াই। উগ্রসেন কহাঁ রাজ দিলাই॥
মাহি সে মৃতক ছহোঁ সুত লায়ো। মাতু দেবকি শোক মিটায়ো॥
ভোমাসুর মুর দৈত্য সংহারি। লায়ে শতদশা সহসকুমারী॥
দী ভিন্হী ত্রিন্চীর সহারা। জরাসিন্ধু রাক্ষস কহাঁ মারা॥

অসুর বৃকাসুর আদিক মারয়ো। ভক্তন কে তব কষ্ট নিবারিয়ো॥
দীন সুদামা কে দুঃখ তারয়ো। তন্দুল তিন মুঠী মুখ ডারয়ো॥
প্রেম কে সাগ বিদুর ঘর মাগে। দুর্যোধন কে মেবা ত্যাগে॥
লাখী প্রেম কি মহিমা ভারী। নৌমী শ্যাম দীনন হিতকারী॥

ভারত কে পার্থ রথ হাঁকে। লিয়ে চক্র কর নহী বল থাকে॥
নিজ গীতা কে জ্ঞান শুনায়ে। ভক্তন হৃদয় সুধা বরসায়ে॥
মীরা থি এসি মতবালী। বিষ পী গই বজাকর তালী॥
রানা ভেজা সাঁপ পিটারী। শালিগ্রাম বনে বনবারি॥

নিজ মায়া তুম বিধিহীন দিখায়ো। উরতে সংশয় সকল মিটায়ো॥
তব শত নিন্দা করী তৎকালা। জীবন মুক্ত ভয়ো শিশুপালা॥
যবহিঁ দ্রৌপদী তের লাগাই। দীননাথ লাজ অব জাই॥
অস অনাথ কে নাথ কনইয়া। ডুবত ভঁবর বচাও নাইয়া॥

সুন্দরদাস আ উর ধারী। দয়া দৃস্টি কিজে বনবারী॥
নাথ সাকল মম কুমতি নিবারো। ক্ষমহু বেগি অপরাধ হামারো॥
খোলো পট অব দর্শন দিজৈ। বোলো কৃষ্ণ কনইয়া কি জৈ॥

॥ শ্রীকৃষ্ণ চালিশা দোহা ॥

যহ চালিশা কৃষ্ণ কা, পাঠ করৈ উর ধারি।
অষ্ট সিদ্ধি নবনিধি ফল, লহৈ পদার্থ চারি॥


কৃষ্ণ চালিশা পাঠের উপকারিতা

কৃষ্ণ চালিশা পাঠের আধ্যাত্মিক এবং মানসিক উভয় উপকারিতা রয়েছে—

  1. মন শান্ত হয় – প্রতিটি চরণে ভক্তির কম্পন মনের অস্থিরতা কমিয়ে দেয়।
  2. সঙ্কট থেকে মুক্তি – ভক্তিভরে পাঠ করলে জীবনের সমস্যার সমাধানে সাহস ও ধৈর্য আসে।
  3. পাপক্ষয় – শ্রীকৃষ্ণের নাম স্মরণে মন শুদ্ধ হয়, নেতিবাচক প্রবণতা দূর হয়।
  4. সফলতা ও সমৃদ্ধি – বিশ্বাস করা হয় যে, কৃষ্ণ ভক্তের জীবনে শুভফল ও উন্নতি নিয়ে আসেন।
  5. আধ্যাত্মিক উন্নতি – ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক গভীর হয়, ভক্তি দৃঢ় হয়।

কৃষ্ণ চালিশা পাঠের নিয়ম

যদিও চালিশা পাঠে কোনো কঠিন নিয়ম নেই, তবে কিছু আচার মানলে ফল আরও গভীর হয়—

  • ভোর বা সন্ধ্যায় স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাকে পাঠ করা ভালো।
  • শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি বা ছবির সামনে প্রদীপ ও ধূপ জ্বালিয়ে বসে পাঠ করবেন।
  • পাঠের আগে “ওম শ্রী কৃষ্ণায় নমঃ” মন্ত্র উচ্চারণ করলে মন কেন্দ্রীভূত হয়।
  • শান্ত মন ও ভক্তিভরে প্রতিটি চরণ ধীরে উচ্চারণ করুন।
  • পাঠ শেষে আরতি করে প্রসাদ বিতরণ করতে পারেন।

কখন কৃষ্ণ চালিশা পাঠ করবেন?

  • জন্মাষ্টমী বা শ্রীকৃষ্ণ জন্মতিথি।
  • একাদশী তিথি (বিশেষত একাদশী আগে বা পরে)।
  • জীবনে যখন মানসিক কষ্ট, দ্বন্দ্ব বা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
  • প্রতিদিন বা সাপ্তাহিকভাবে নিয়মিত ভক্তিভরে পাঠ করা যায়।

কৃষ্ণ চালিশা পাঠের আধ্যাত্মিক অর্থ

কৃষ্ণ চালিশা শুধু ভক্তিগান নয়, এটি জীবনের এক শিক্ষা। এর প্রতিটি লাইন আমাদের শিখায়—

  • সত্যের পথে চলতে
  • প্রেম ও সহমর্মিতা গড়ে তুলতে
  • কঠিন পরিস্থিতিতেও ধৈর্য না হারাতে
  • এবং ঈশ্বরের ইচ্ছায় আস্থা রাখতে

উপসংহার

শ্রীকৃষ্ণ চালিশা পাঠ ভক্তের হৃদয়ে প্রেম, শান্তি ও আনন্দের আলো জ্বালায়। আধুনিক ব্যস্ত জীবনে যখন মানুষ মানসিক শান্তি খুঁজছে, তখন কৃষ্ণ চালিশা হতে পারে এক সহজ ও শক্তিশালী ভক্তিমার্গ। তাই প্রতিদিন কিছু সময় নিয়ে শ্রীকৃষ্ণের নাম স্মরণ করুন—কম করে ১০৮ বার হরে কৃষ্ণ মহা মন্ত্র (হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ, হরে হরে, হরে রাম, হরে রাম, রাম রাম, হরে হরে) জপ করুন পরম ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ আপনার জীবনে সর্বদা শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।

আরো অন্যান্য আধ্যাতিক পোস্ট গুলো পড়ুন:-

Share Please:
অস্বীকৃতি

এই লেখা ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক তথ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। এতে বর্ণিত পুজা পদ্ধতি, মন্ত্র এবং অন্যান্য তথ্য প্রাচীন শাস্ত্র, লোকাচার ও ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। পাঠকদের অনুরোধ করা হচ্ছে, নিজের বিশ্বাস ও সুবিধা অনুযায়ী পুজা পদ্ধতি গ্রহণ করুন। যেকোনো ধর্মীয় কাজ করার আগে যোগ্য পণ্ডিত বা বিদ্বান থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই লেখায় দেওয়া তথ্য ব্যবহারের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারকারীর ওপর থাকবে।

আপনার মতামত জানাতে এবং নতুন ধর্মীয় পোস্টের আপডেট পেতে WhatsApp গ্রুপে যোগ দিন! Join Now

নমস্কার! আমি শ্রী গোপাল চন্দ্র — একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু সনাতনী। আমি বিগত সাত বছরের ও অধিক সময় ধরে, হিন্দু ধর্ম, সনাতন সংস্কৃতি এবং ভারতীয় আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য নিয়ে নিয়মিতভাবে অনুশীলন ও লেখালেখি করে আসছি। আমি হিন্দু ধর্মের প্রাচীন ঐতিহ্য, ধর্মগ্রন্থ, এবং আধ্যাত্মিকতার জ্ঞান সহজ ভাষায় উপস্থাপন করার চেষ্টা করি, যাতে সকলেই এই মহান ধর্মের গভীর জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আমি বিশ্বাস করি যে সনাতন ধর্ম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি একটি জীবনধারা, যা আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করে এবং জীবনের প্রকৃত অর্থ বোঝায়।"

Leave a Comment