ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, যিনি গোপীদের হৃদয় সম্রাট, ধর্মরক্ষক ও করুণাময়, তাঁর আরাধনা ভক্তের জীবনে আনন্দ, শান্তি ও মুক্তির পথ খুলে দেয়। শ্রীকৃষ্ণ আরতি হল ভক্তদের অন্তরের প্রার্থনা, যেখানে আমরা ভগবানের চরণে সমর্পণ করি আমাদের মন, প্রাণ ও কর্ম। প্রতিদিন ভোরে বা সন্ধ্যায় এই আরতি পাঠ করলে সংসারের দুঃখ দূর হয় এবং অন্তরে ভক্তিভাব জাগ্রত হয়।

শ্রীকৃষ্ণের আরতি গীত।
আরতি গীত
ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায় ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণায় নমঃ মঙ্গলার্তিক্যদীপং সমর্পয়ামি ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে নমস্কার করে মঙ্গল আরতি করছি ।
(‘আরতি কুঞ্জবিহারি কি, শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি’ নিম্ন আরতি গাওয়া হবে।)
আরতি কুঞ্জবিহারি কি, শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি ॥
গলে মে বৈজন্তী মালা, বাজাবে মুরলী মধুর বালা ।
শ্রবণ মে কুণ্ডল ঝলকালা, নন্দ কে আনন্দ নন্দলালা ॥
গগন সম অঙ্গ কান্তি কালি, রাধিকা চমক রহি আালি ।
লতন মে ঠাঢ়ে বনমালি; ভ্রমর সি আলক, কস্তূরি তিলক,
চন্দ্র সি ঝলক; ললিত ছবি শ্যামা প্যারি কি ॥
শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি
আরতি কুঞ্জবিহারি কি, শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি ॥
কনকময় মোর মুকুট বিলসে, দেবতা দর্শন কো তরসে ।
গগন সোঁ সুমন রাসি বরসৈ; বাজে মুরচঙ্গ,
মধুর মৃদঙ্গ, গ্বালিন সংগ; অতুল রতি গোপ কুমারি কি ॥
শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি,
আরতি কুঞ্জবিহারি কি, শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি ॥
যহাঁ সে প্রকট ভই গঙ্গা, কলুষ কলি হারিণি শ্রীগঙ্গা ।
স্মরণ সে হোত মোহ ভঙ্গা; বসি শিব শীর্ষ,
জটা কে মধ্যে, হরে অঘ কীচ; চরণ ছবি শ্রীবনওয়ারি কি ॥
শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি
আরতি কুঞ্জবিহারি কি, শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি ॥
চমকতি উজ্জ্বল তট রেনু, বাজ রহি বৃন্দাবন বেনু ।
চহুঁ দিশি গোপি গ্বাল ধেনু হঁসত মৃদু মন্দ,
চাঁদনি চাঁদ, কটত ভব ফাঁদ; টের সুন দীন ভিখারি কি ॥
শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি
আরতি কুঞ্জবিহারি কি, শ্রী গিরিধর কৃষ্ণমুরারি কি ॥
পাঠের নিয়ম
- ভোরবেলা বা সন্ধ্যায় স্নান করে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করতে হবে।
- ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতিমা বা ছবির সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে ফুল ও তাজা তুলসী পাতা নিবেদন করতে হবে।
- মিষ্টি, মাখন বা পায়েস নৈবেদ্য হিসেবে অর্পণ করা যায়।
- আরতি শেষে সবাই প্রসাদ গ্রহণ করবে এবং “হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ, হরে হরে” জপ করতে হবে।
শ্রীকৃষ্ণ আরতি পাঠের সুফল
- সংসারের দুঃখ ও মানসিক অশান্তি দূর হয়।
- ভক্তের অন্তরে প্রেম, ভক্তি ও করুণা বৃদ্ধি পায়।
- অর্থনৈতিক উন্নতি ও সংসারে সৌভাগ্য আসে।
- পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে।
উপসংহার
শ্রীকৃষ্ণ আরতি শুধু ভক্তির গান নয়—এটি আত্মসমর্পণের এক অনন্য প্রার্থনা। প্রতিদিন ভক্তিভরে এই আরতি পাঠ করলে জীবনে প্রেম, শান্তি ও ভগবানের সান্নিধ্য অনুভব করা যায়।