শ্রী গণেশ চালিশা – জীবনের প্রতিটি বাধা দূর করুন গণেশ চালিশা পাঠের মাধ্যমে – সম্পূর্ণ গণেশ চৌপাই ও নিয়ম

Share Please:

গণেশ চালিশা: হিন্দু ধর্মে ভগবান গণেশকে বলা হয় বিঘ্নহর্তাসিদ্ধিদাতা। যে কোনো পূজা বা শুভ কাজের আগে ভগবান গণেশের নাম স্মরণ করা হয়। বিশ্বাস করা হয়, ভক্তিভরে গণেশ চালিশা পাঠ করলে সমস্ত বাধা দূর হয়, জ্ঞান ও বিদ্যা লাভ হয় এবং জীবনে সাফল্য আসে।

গণেশ চালিশা

গণেশ চালিশা কী?

গণেশ চালিশা হলো ভগবান গণেশকে সম্পর্কিত একটি প্রার্থনা গীত, যা ৪০টি চৌপাই নিয়ে গঠিত। প্রতিটি চৌপাই ভগবান গণেশের মহিমা, গুণ এবং জীবনের বাধা দূর করার ক্ষমতা তুলে ধরে। এই চালিশা পাঠ করলে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মনোবল বৃদ্ধি পায়। ভগবান গণেশকে ‘বিঘ্ননাশক’ বলা হয়, তাই নতুন কাজ শুরু বা বিশেষ প্রয়োজনে এই চালিশা পাঠ করার বিশেষ গুরুত্ব আছে। গণেশ চতুর্থী, নতুন উদ্যোগ, বা যেকোনো শুভকাজের আগে গণেশ চালিশা পাঠ করলে আশীর্বাদ ও সাফল্য লাভ হয়।


গণেশ চালিশা (বাংলা লিপিতে পূর্ণ)

॥শ্রী গণেশ চালীসা দোহা ॥

জয় গণপতি সদগুণ সদন, করি বর বদন কৃপাল।
বিঘ্ন হরণ মঙ্গল করণ, জয় জয় গিরিজালাল॥

শ্রী গণেশ চৌপায়ী ॥
জয় জয় জয় গণপতি গণরাজু, মঙ্গল ভরণ করণ শুভ কাজু।
জয় গজবদন সদন সুখদাতা, বিশ্ববিনায়ক বুদ্ধি বিধাতা
বক্রতুণ্ড শুচি শুণ্ড সুহাবন, তিলক ত্রিপুণ্ড ভাল মন ভাবন।
রাজত মণি মুক্তন উর মালা, স্বর্ণ মুকুট শির নয়ন বিশালা

পুস্তক পানী কুঠার ত্রিশূলং, মোদক ভোগ সুগন্ধিত ফুলং।
সুন্দর পীতাম্বর তন সাজিত, চরন পাদুকা মুনি মন রাজিত
ধনি শিব সুভন ষড়ানন ভ্রাতা, গৌরি ললন বিশ্বখ্যাতা।
ঋদ্ধি সিদ্ধি তব চম্বর সুধারে, মূষক বাহন সোহত দ্বারে

কহঁও জন্ম শুভ কথা তোমারি, অতি শুচি পবন মঙ্গলকারি।
এক সময় গিরিরাজ কুমারি, পুত্র হেতু তপ কীনহো ভারি
ভয়ো যজ্ঞ যখন পূর্ণ অনুপা, তব পৌঁছয়ো তুম ধরি দ্বিজ রূপা।
অতিথি জানি কে গৌরি সুখারি, বহু বিধি সেবা করি তোমারি

অতি প্রসন্ন হই তুম বর দীনহা, মাতু পুত্র হিত য তপ কীনহা।
মিলহি পুত্র তুহি, বুদ্ধি বিশালা, বিনা গর্ভ ধারন এহি কালা
গণনায়ক গুণ জ্ঞান নিধানা, পূজিত প্রথম রূপ ভাগবানা।
অস কেহি অন্তর্ধান রূপ হে, পলনা পর বালক স্বরূপ হে

বনি শিশু রুদন যবহি তুম ঠানা, লক্ষি মুখ সুখ নাহি গৌরি সমানা।
সকল মগন সুখ মঙ্গল গাবহি, নভ তে সুরন সুমন বর্ষাবহি
শম্ভু উমা বহু দান লুটাবহি, সুর মুনিজন সুত দেখন আহহি।
লক্ষি অতি আনন্দ মঙ্গল সাজা, দেখন ভি আয়ে শনি রাজা

নিজ অবগুণ গণি শনি মন মাহী, বালক দেখন চাহৎ নাহি।
গিরিজা কছু মন ভেদ বাড়ায়ো, উৎসব মোর ন শনি তুহি ভায়ো
কহন লাগে শনি মন সকুচাই, কা করিহোঁ শিশু মহি দেখাই।
নাহি বিশ্বাস উমা উর ভয়ুক্ত, শনি সোঁ বালক দেখন কাহুক্ত

পড়তহি শনি দৃষ্টিকোণ প্রকাশা, বালক শির উড়ি গয়ো আকাশা।
গিরিজা গিরি বিকল হে ধরনী, সো দুখ দশা গয়ো নাহি বরনী
হাহাকার মচ্যো কৈলাশা, শনি কীনহো লক্ষি সুত কা নাশা।
তুরত গরুড় চড়ি বিষ্ণু সিদ্ধায়ে, কাটি চক্র সো গজশির লায়ে

বালক কে ধড় উপর ধারয়ো, প্রাণ মন্ত্র পড়ি শঙ্কর ডারয়ো।
নাম ‘গণেশ’ শম্ভু তব কীনহে, প্রথম পূজ্য বুদ্ধি নিধি বর দীনহে
বুদ্ধি পরীক্ষা যব শিব কীনহা, পৃথ্বী কর প্রদক্ষিণ লীন্হা।
চলে ষড়ানন, ভ্রমি ভুলাই, রচে বেঠি তুম বুদ্ধি উপায়

চরণ মাতু পিতু কে ধর লীন্হে, তিনকে সাত প্রদক্ষিণ কীনহে।
ধনি গণেশ কহি শিব হিয় হর্ষ্যা, নভ তে সুরন সুমন বহু বর্ণ্যো
তোমারি মহিমা বুদ্ধি বড়াই, শেষ সহস মুখ সকে ন গাহি।
মেই মতি হীন মলিন দুখারি, করহুঁ কৌন বিধি বিনয় তোমারি

ভজত ‘রাম সুন্দর’ প্রভুদাসা, জগ প্রয়াগ ককরা দুর্বাসা।
অব প্রভু দয়া দীন পর কিজে, আপনী ভক্তি শক্তি কিছু দিজে

॥শ্রী গণেশ চালীসা দোহা ॥

শ্রী গণেশ এ চালীসা, পাঠ করই ধর ধ্যান।
নিত নব মঙ্গল গ্রহ বসে, লহে জগত সন্মান॥
সমন্ধ আপনা সহস্র দশা, ঋষি পঞ্চমী দিনেশ।
পূরণ চালীসা ভয়ো, মঙ্গল মূর্তি গণেশ॥


গণেশ চালিশা পাঠের নিয়ম

  1. সকালে স্নান সেরে পরিষ্কার স্থানে বসতে হবে।
  2. ভগবান গণেশের ছবি বা মূর্তির সামনে প্রদীপ, ধূপ জ্বালাতে হবে।
  3. এরপর ভক্তিভরে গণেশ চালিশা পাঠ করতে হবে।
  4. বৃহস্পতিবার বা মঙ্গলবার এই পাঠ বিশেষভাবে শুভ।
  5. পাঠ শেষে ভগবানকে লাড্ডু বা মোদক নিবেদন করলে পূণ্য বৃদ্ধি পায়।

গণেশ চালিশা পাঠের উপকারিতা

  • সংসারের সমস্ত বাধা দূর হয়।
  • কর্মজীবন ও ব্যবসায় উন্নতি হয়।
  • বিদ্যা, বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।
  • যেকোনো নতুন কাজে সাফল্য নিশ্চিত হয়।

উপসংহার

গণেশ চালিশা ভক্তিভরে পাঠ করলে জীবনের সব বাধা দূর হয় এবং নতুন শক্তির সঞ্চার হয়। প্রত্যেক ভক্তই যেন সকাল বা সন্ধ্যায় অন্তত একবার এই চালিশা পাঠ করেন, তাহলেই সংসার সুখী ও শান্তিপূর্ণ হয়।


আরও ধর্মীয় ভক্তিমূলক আর্টিকেল পড়ুন।


FAQ – গণেশ চালিশা নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন

প্রশ্ন: গণেশ চালিশা কখন পাঠ করা শ্রেষ্ঠ?

উত্তর: ভোরবেলা স্নান সেরে অথবা সন্ধ্যায় পূজা শেষে গণেশ চালিশা পাঠ করা সবচেয়ে শুভ।

প্রশ্ন: গণেশ চালিশা পাঠ করলে কী উপকার পাওয়া যায়?

উত্তর: ভক্তিভরে পাঠ করলে জীবনের সব বিঘ্ন দূর হয়, জ্ঞান ও বিদ্যা বৃদ্ধি পায় এবং সংসারে সমৃদ্ধি আসে।

প্রশ্ন: সপ্তাহে কতবার চালিশা পড়া উচিত?

উত্তর: প্রতিদিনই পড়া যায়, তবে বিশেষ করে মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার পাঠ করা অত্যন্ত ফলপ্রদ।

প্রশ্ন: গণেশ চালিশা পাঠের সময় কী নিবেদন করতে হয়?

উত্তর: ভগবান গণেশের প্রিয় মোদক, লাড্ডু, দূর্বা ঘাস ও লাল ফুল নিবেদন করা শ্রেয়।

Share Please:
অস্বীকৃতি

এই লেখা ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক তথ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। এতে বর্ণিত পুজা পদ্ধতি, মন্ত্র এবং অন্যান্য তথ্য প্রাচীন শাস্ত্র, লোকাচার ও ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। পাঠকদের অনুরোধ করা হচ্ছে, নিজের বিশ্বাস ও সুবিধা অনুযায়ী পুজা পদ্ধতি গ্রহণ করুন। যেকোনো ধর্মীয় কাজ করার আগে যোগ্য পণ্ডিত বা বিদ্বান থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই লেখায় দেওয়া তথ্য ব্যবহারের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারকারীর ওপর থাকবে।

আপনার মতামত জানাতে এবং নতুন ধর্মীয় পোস্টের আপডেট পেতে WhatsApp গ্রুপে যোগ দিন! Join Now

নমস্কার! আমি শ্রী গোপাল চন্দ্র — একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু সনাতনী। আমি বিগত সাত বছরের ও অধিক সময় ধরে, হিন্দু ধর্ম, সনাতন সংস্কৃতি এবং ভারতীয় আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য নিয়ে নিয়মিতভাবে অনুশীলন ও লেখালেখি করে আসছি। আমি হিন্দু ধর্মের প্রাচীন ঐতিহ্য, ধর্মগ্রন্থ, এবং আধ্যাত্মিকতার জ্ঞান সহজ ভাষায় উপস্থাপন করার চেষ্টা করি, যাতে সকলেই এই মহান ধর্মের গভীর জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আমি বিশ্বাস করি যে সনাতন ধর্ম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি একটি জীবনধারা, যা আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করে এবং জীবনের প্রকৃত অর্থ বোঝায়।"

Leave a Comment