অঙ্গে মাখো মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা লিরিক্স
অঙ্গে মাখো মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা লিরিক্স:- এটি আমাদের সনাতন ধর্মের বিশেষ করে হিন্দু বাঙালি দের হরিবাসর এর বহু প্রচিলিত হরি নাম সংকীর্তন। এই হরি নাম সংকীর্তনটি হরিবাসরে নগর ভ্ৰমণ করে আসার পর দধি পসরা ভাঙা পর ভক্তগণকে হরিবাসর যে কিনা বৃন্দাবনের সমান সেই পবির্ত ধামের ধুলা অঙ্গে মেখে শরীর, মন, আত্মাকে শুদ্ধ ও পাপ মুক্ত করার আহ্বান জানায়।
অঙ্গে মাখো,মাখো হে ত্রই না ব্রজের ধুলা
ওরে ধুলা নয়রে,ধুলা নয়রে ভক্তি পদের ধুল!!
সেই ধুলা বাঞ্চা করে ব্রজেরা এখনো
অঙ্গে মাখো, মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা
ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি পরে গঙ্গার জলে„
গঙ্গা মুক্ত হয় ভাগবত বলে! !!!
অঙ্গে মাখো,মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা।।
ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি অঙ্গে মাখা যায়„
কোটি জনের পাপ ছাড়িয়া স্বর্গে চলে যায় !!!
অঙ্গে মাখো,মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা
ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি লাগে পাপির গায়
সে পাপি নেচে নেচে বৈকুন্ঠেতে যায় !!!
অঙ্গে মাখো, মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা
ওরে সংকীর্তনের ধুলা নিয়ে যেবা পথে যায়
জলের কুমির বনের বাঘ ভয়েতে পালাই !!!
অঙ্গে মাখো মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা
ওরে সংকীর্তনের ধুলা রে ভাই যেবা করে হেলা..
সর্ব অঙ্গ নষ্ট হয় চক্ষু হয় তার কানা !!!
অঙ্গে মাখো মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা
ওরে শ্রীধাম নাচে সুদাম নাচে নাচিতে লাগিলো
ওরে শ্রীধাম নাচে সুদাম নাচে নাচিতে লাগিলো
মা যশোদা নেচে নেচে কৃষ্ণ কোলে নিলো !!!
হরে কৃষ্ণ„হরে কৃষ্ণ„কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম„ রাম রাম হরে হরে!!!!
হিন্দু সনাতন ধর্মের এক মহিমান্বিত অংশ হলো হরিনাম সংকীর্তন। বিশেষ করে হিন্দু বাঙালিদের মধ্যে হরিবাসর এক পবিত্র ও আনন্দঘন অনুষ্ঠান, যেখানে ভক্তগণ নগর পরিক্রমার পর ভগবানের মহিমা গানে বিভোর হয়ে যান। এই মহৎ অনুষ্ঠান শেষে “অঙ্গে মাখো মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা” সংকীর্তনটি পরিবেশিত হয়।
এই কীর্তনটি মূলত ভক্তদের শুদ্ধিকরণের বার্তা বহন করে। এতে ব্রজের ধুলার মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে, যা শুধু ধুলা নয়, বরং ভক্তির প্রতীক। এই পবিত্র ধুলার স্পর্শে দেহ, মন ও আত্মা পরিশুদ্ধ হয় এবং সমস্ত পাপ মোচন হয়।
সংকীর্তনের ভাবার্থ ও তাৎপর্য
সংকীর্তনের প্রথম দুটি পঙ্ক্তি থেকেই বোঝা যায় যে, এটি সাধারণ ধুলার কথা বলছে না। বরং এটি সেই ধূলিকণা, যা ব্রজধামের পবিত্র মাটি। যে মাটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণধূলি ধারণ করেছে, যে মাটি এখনও ভক্তরা বাঞ্ছা করে। এই ধুলা ভক্তির প্রতীক এবং মোক্ষ লাভের এক অনন্য মাধ্যম।
- “ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি পরে গঙ্গার জলে, গঙ্গা মুক্ত হয় ভাগবত বলে”
- এই লাইনটিতে সংকীর্তনের ধুলার মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে। সংকীর্তনের ধুলা যদি গঙ্গার জলে পড়ে, তাহলে গঙ্গাও পবিত্র হয়ে ওঠে। এটি বোঝায় যে, সংকীর্তন ও ভক্তির শক্তি এতটাই প্রবল যে তা সর্বত্র শুদ্ধি আনতে সক্ষম।
- “ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি অঙ্গে মাখা যায়, কোটি জনের পাপ ছাড়িয়া স্বর্গে চলে যায়”
- এখানে বলা হয়েছে, সংকীর্তনের ধুলা গায়ে মাখলে কোটি পাপ মুক্ত হয় এবং ভক্ত স্বর্গলাভ করেন। এটি একধরনের আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির প্রতীক।
- “ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি লাগে পাপির গায়, সে পাপি নেচে নেচে বৈকুন্ঠেতে যায়”
- এই লাইনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি দেখায় যে, কেবলমাত্র সংকীর্তনের ধুলার সংস্পর্শেই একজন পাপী পর্যন্ত বৈকুন্ঠ লাভ করতে পারেন। এটি ভক্তির অপার মহিমা ও করুণার প্রতিফলন।
হরিবাসরে এর গুরুত্ব
হরিবাসর হলো এক ধরনের সারারাত ধরে চলা হরিনাম সংকীর্তনের আয়োজন, যা ভক্তগণ গভীর ভক্তি ও নিষ্ঠার সাথে উদযাপন করেন। এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য হলো আত্মশুদ্ধি, পাপ মোচন ও ভগবানের কৃপা লাভ করা।
এই সংকীর্তনটি নগর পরিক্রমা শেষে গাওয়া হয় এবং ভক্তদের মনে ভগবানের প্রতি গভীর প্রেম ও ভক্তি সঞ্চারিত করে। শ্রীধাম, সুদাম, মা যশোদা সহ সকল ভক্তগণ কীর্তনের তালে তালে নৃত্যে মেতে ওঠেন। এই আনন্দময় পরিবেশ সকলের মনে এক গভীর আধ্যাত্মিক অনুভূতি সৃষ্টি করে।
উপসংহার
“অঙ্গে মাখো মাখো হে এই না ব্রজের ধুলা” কীর্তনটি শুধুমাত্র একটি গানের অংশ নয়, এটি এক মহৎ দর্শনের প্রতিফলন। এটি আমাদের শেখায় যে, প্রকৃত ভক্তি ও আত্মশুদ্ধিই মুক্তির পথ। সংকীর্তনের মাধ্যমে আমরা ভগবানের চরণধূলি গ্রহণ করে, দেহ, মন ও আত্মাকে শুদ্ধ করতে পারি।
এই হরিনাম সংকীর্তনটি আজও ভক্তদের হৃদয়ে গভীরভাবে স্থান করে নিয়েছে এবং হরিবাসরকে আরও পবিত্র ও মহিমান্বিত করে তুলেছে। তাই, আসুন আমরা সকলেই ভক্তির ধূলিতে নিজেকে শুদ্ধ করে, সংকীর্তনের আনন্দে আত্মহারা হই।
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে।